ডোমারে ৬ কোটি টাকা প্রতারণায় দুই নারীর সম্পৃক্ততা ডিমলার মামুনের সাথে
Published on Thursday, January 14, 2021 at 10:48 am
স্টাফ রিপোর্টার : নীলফামারীর ডোমারের ৬ শাতধিক নারীকে সম্পৃক্ত করে ৬ কোটি টাকার অধিক প্রতারণার ঘটনায় প্রতারক চক্রের সদস্য ডিমলার মাহমুদুল হাসান মামুন সাথে পরোক্ষ সহযোগীতায় রয়েছে বলে দুই নারীর সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সূত্র ধরে খোঁজখবর নিয়ে ঐ দুই নারীর সম্পৃক্ততার স্পষ্ট ধারনা পাওয়ায় সীমান্তটাইম২৪.কম অলনাইন পত্রিকায় তথ্য উপাত্ত দিয়েছে ডোমারে টাকা হারিয়ে নি:স্ব হয়ে যাওয়া ভুক্তভোগী প্রতারিত নারীরা। ঘটনার দিন ১১ ডিসেম্বর ডিমলার মামুন ও ডোমারের আদম সুফি ডোমার থানার হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় ৫০ লা
খ টাকার যে চেকখানা ডিমলার মামুন মুচলেকা হিসাবে থানায় সকলের উপস্থিতিতে জমা করেন সেটি স্বপ্ন সমবায় সমিতির যৌথ একাউন্টের মামুন ও তার স্ত্রী হোমায়রা আরজু তনু’র স্বাক্ষরে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ডোমার বাজার ভোগ্যপন্য সমবায় সমিতির আঁড়ালে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে নারীদের প্রলুদ্ধ করে ঘটনার শুরুর দিকে নারীদের আকর্ষণ সৃষ্টি ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য ডিমলার আকবর এন্টারপ্রাইজ মোটরসাইকেল শো-রুম থেকে ৬টি এ্যাপাসি আরটিআর ১৬০ সিসি মোটরসাইকেল ক্রয় করে মোটরসাইকেল শো-রুমে একটি চেক গ্যারান্টি হিসাবে জমা করেন প্রতারক মামুন।এখানেও তার স্ত্রীর সাথে ঐ একই একাউন্টের যৌথ স্বাক্ষরের চেক প্রদান করেন মামুন। এ থেকেই ডোমারের ভুক্তভোগী প্রতারিত নারীরা অভিযোগ করছে তার স্ত্রীও জড়িত এই প্রতারণার ঘটনায়। প্রতারণার কোটি কোটি টাকা মামুনের স্ত্রীর একাউন্টেও থাকতে পারে বলেও প্রতারিত নারীরা ধারনা করছেন। সমিতির আড়াঁলে কোম্পানীর প্রশিক্ষকদ্বয় শাকিল ও মাহবুব আলম গাজিপুরে শতকোটি টাকা প্রতারণা করে পালিয়ে এসে ঠাঁই নেয় ডিমলার মামুনের কাছে। মামুন ডোমারের ভোগ্যপন্য সমিতিতে জায়গা দিয়ে প্রতারণার কাজটি আরো সহজ করেন। শাকিল ও মাহবুব এর কৌশলে মাত্র ৪০/৪৫ দিনের মধ্যে ৬ কোটি টাকার অধিক টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় এই প্রতারক চক্র দলটি।
গত ১১ ডিসেম্বর শুক্রবার ডোমারে প্রতারণায় প্রতারিত নারীদের টাকা ও ভুক্তভোগী এক নারী নাজমা ও তার শিশু সন্তান নিশাদ (৭)কে অপহরণ করে নিয়ে যায় অপর দুই প্রতারকের সহযোগীতায় প্রখ্যাত প্রতারক শাকিল ও মাহবুব আলম। ঘটনা জানাজানি হলে একই দিনে প্রতারিত নারীদের মুখে প্রতারণার ঘটনার সাথে জড়িত ডিমলার মামুন ও ডোমারেরর আদম সুফি থানা হেফাজতে থাকেন। মুচলেকা দিয়ে প্রতারিত নারীদের টাকা ফেরদের কথা বলে পরের দিন ১২ ডিসেম্বর আবারও ডিমলার মামুন সমিতির আঁড়ালে ডোমারের কোম্পানীতে গিয়ে কাগজপত্র নিয়ে পালাতে চাইলে প্রতারিত নারীরা আবারও তাকে আটক করে থানা হেফাজতে দেন। থানা থেকে গভীর রাতে ছাড়া পেয়ে ১৩ তারিখ সকালে তার ফেসবুক টাইম লাইনে “নাজমা ও তার সন্তানসহ ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে মাহবুব ও শাকিল পালিয়েছে পুলিশ তাদের খুঁজতেছে, প্রতারণাই এদের কাজ ” এই স্টাটাস পোষ্ট করেন । এখানে তার স্টাটাসে বলছে প্রতারণাই তাদের কাজ এবং তাদের কোন নাম ঠিকানা দেয়নি। যাদের সাথে এতদিন কাজ করলো তাদের নাম ঠিকানা কিংবা মোবাইল নম্বর কোন কিছুই বিস্তারিত দেয়নি মামুন। অথচ ১৩ ডিসেম্বর রংপুরের বসবাসকারী আফরোজা আফরিন ফেসবুক আইডি থেকে তাদের বিস্তারিত ঠিকানা দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে এবং একটি মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে প্রয়োজনে যোগাযোগ করার কথা বলেন। তার ফেসবুক পোষ্টে কমেন্টস করেন অনেকেই। তিনি তার উত্তরে এমন ভাবে উত্তর দেন যেন তিনি ঘটনার সব জানেন। ভুক্তভোগী নারীদের সন্দেহ থেকে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় ঐ নারীর বাড়ী হলেও তিনি থাকেন রংপুর সিটিতে। বিষয়টি আরো পরিস্কার হয় ডিমলার মামুনের বিরুদ্ধে ঐ নারী ও শিশু অপহরণ মামলা হলে আফরোজা আফরিন মামলার বাদীর সাথে ফেসবুকে কমেন্টস এ নানা কথা বলেন। আফরোজা আফরিন বলেন নিজের বউ নিজেই ভাগিয়ে দিয়েছেন আর অপহরণ মামলা করছেন। মামলার বাদী আল আমিন ঘটনার পরেরদিন থেকে স্ত্রী সন্তানকে খুঁজতে কোথায় কোথায় গেছেন তাও আফরোজা আফরিন কমেন্টস এ উল্লেখ করেন।
এ থেকেও সন্দেহ হতে থাকে আফরোজা আফরিনের সম্পৃক্ততা রয়েছে প্রতারণার ঘটনার সাথে। শুধু তাই নয়, ঘটনার পরের দিন তিনি যে নম্বরটা তার ফেসবুকে দিয়ে প্রতারকদের ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন সে নম্বরটা ডিমলার প্রতারক মামুনের। বিষয়টি পরিস্কার করেন ডোমারে ভুক্তভোগী নারী তানজিলা আক্তার। তিনি প্রতিবেদককে জানান, ডোমার ভোগ্যপন্য সমিতি থেকে গেল বছর ২৮ নভেম্বর একটি ফ্রিজ পাঠানো হয় রংপুরে। করতোয়া কুড়িয়ার সার্ভিসের মামুনের নম্বরটি আর আফরোজা আফরিনের এফবিতে দেওয়া নম্বরটি একই। তাহলে বিষয়টি পরিস্কার হয়েছে প্রতারক মামুনের সাথে আফরোজা আফরিনের যোগাযোগ রয়েছে নিয়োমিত সর্বক্ষণ। সূত্র ধরে ডিমলায় চাকুরীর জন্য প্রতারিত যুবক আসাদুজ্জামান রাসু এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতারক মামুন ও স্ত্রী হোমায়রা আরজু তনু আমার বন্ধু ও বান্ধবী। সেই সুত্রে আমার বাবা মাকে প্রলুদ্ধ করে আমার কাছে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেয়। পরবর্তীতে তারা আমাকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিলেও এখনও ১৩ লাখ টাকা ফেরত দেয়নি। টাকা নেওয়ার সময় তার স্ত্রী তনু’ও জড়িত ছিলো। আমি মামুনের নামে তখন বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দায়ের করায় রংপুরের একটি মেয়ে আফরোজ আফরিন নামে ফেসবুক আইডি থেকে ম্যাসেঞ্জারে অভিযোগ না করার জন্য অনুরোধ করে। রাসু জানায় আমি তখন তাকে বলেছিলাম আপনি কে ? উত্তরে মেয়েটি বলছিলো আমি মামুনের পরিচিত । বিভিন্ন সময়ে ডিমলার প্রতারক মামুনকে বাঁচাতে রংপুরের আফরোজা আফরিনের কর্মকান্ডে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে প্রতারিত নারীদের। প্রতারিত নারীরা ধারণা করছে প্রতারক মামুন বিভিন্ন প্রতারণা মূলক কর্মকান্ডে এই দুই নারীর পরোক্ষ সহযোগীতা নিয়ে থাকেন। তারা আইন শৃখংলাবাহীনিকে এই দুই নারীর ব্যাংক একাউন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম ক্ষতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মামুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সীমান্তটাইমস২৪.কমকে জানান,রংপুরের আফরোজা আফরিন আমার কি হয় এটা আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন না। মানুষের শুভাকাঙ্গি থাকতে পারে না ? সে আমার শুভাকাঙ্গিও হতে পারে ! এ সময় তিনি আরো বলেন, পত্রিকায় শুধু আমার ক্রাইমের কথা লিখা হয় আমি যে ডোমারের নারীদেরকে অনেক কিছু দিয়েছি সেটাতো লেখা হয় না। তিনি যা দিয়েছেন তা উল্লেখ করে বলেন, ফ্রিজ-১৪২, সেলাইমেশিন-১০৫, মোবাইল ভিভো-৮৫, রাইচকুকার-২০০, পানির কেটলি-৪০, মোটরসাইকেল-৬, সয়াবিন তৈল- ১ হাজার লিটার ও চুলাসহ নানা পন্য দিয়েছি। প্রতারিত নারীরা এসব পন্যে পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের সকল নারীকে প্রলুদ্ধ ও বিশ্বাস অর্জনের জন্যই এসব দিয়েছে প্রতারক মামুন। এসব পাওয়ার পরেই তো আমরা আরো বেশী টাকা দিয়ে নি:স্ব হয়ে পথে বসেছি। আর প্রতারকরা আমাদের বোকা বানিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে ।
আফরোজা আফরিন নামে যে নিউজ টা করছেন। ফ্রিজ টার ব্যাপারে এটা কি আপনি প্রমান দিতে পারবেন। না পারলে আমি কিন্তুু আইনত সাহায্য নিতে বাধ্য হবো এটা কিন্তুু মান সন্মানের ব্যাপার। মামুনের সাথে আমার যোগাযোগ কথাবার্তা হতেই পারে। তাকে আমি সাহায্য করতেই পারি প্রতারকদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।